Total Visitor
Website counter
Counting since March 26, 2008

Success Story of Member

Client Image

শাখার নাম : সিরাজগঞ্জ শাখা
কোড নং : ৪৭
ডিএমসিবি’র বিনিয়োগ সহায়তায় ব্যবসায় সফলতা পেয়েছেন রাকিবুল ইসলাম


জীবন-জীবিকার তাগিদে মানুষকে যেখানে কর্মের সন্ধানে ছুটতে হয়। হতাশায় ভুগতে হয়। কাজ নেই, কর্ম খালি নেই। কিন্তু রাকিবুল ইসলামের ক্ষেত্রে এমনটি হয়নি। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই ব্যবসায় সফল ও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন সৎ ও পরিশ্রমী এ যুবক। বাবা আঃ রশিদের সংসারে ঠিক সেভাবে অসচ্ছলতা ছিল না। আবার খুব সচ্ছলও ছিল না। মাঠে আবাদযোগ্য জমি ছিল তাদের। তার পাশাপাশি বাবার সংসারের কিছুটা সহযোগিতা করতে ব্যবসার দিকে মনোনিবেশ করেন তিনি। বাবার ফল ব্যবসায় সহায়তা করেন রাকিবুল ইসলাম। অতপর বাবার ব্যবসার সূত্র ধরেই রাকিবুল ইসলাম যৌবনের শুরুতেই ক্ষুদ্র পরিসরে আলাদাভাবে ফল ব্যবসা শুরু করেন। কালক্রমে ঐ ব্যবসাতে তিনি “দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড” (ডিএমসিবি) এর সিরাজগঞ্জ শাখা হতে বিনিয়োগ সহায়তায় নিয়ে বর্তমানে বড় পরিসরের একজন সফল ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন। ডিএমসিবি’র বিনিয়োগ সহায়তা নিয়ে কিভাবে সফল ও আদর্শ ফল ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন রাকিবুল ইসলাম তারই কিছুটা শোনা যাক তার সাথে গল্পের মাধ্যমে।

কৈশোরে স্কুলে লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার ফলের ব্যবসায় সহায়তা করতেন টগবগে যুবক রাকিবুল ইসলাম। বাবার কিছু চাষাবাদ যোগ্য জমি ছিল। তবুও তিনি ব্যবসার দিকে মনোনিবেশ করেন। সংসারের অভাব দূর করতে। ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর বিদ্যা শিক্ষায় ইতি টেনে বাবার হাত ধরেই অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের স্বল্প অর্থ ও আত্মীয় স্বজনদের নিকট থেকে ধারে নেওয়া কিছু অর্থ দিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে ২০১২ সালে সিরাজগঞ্জ রোড এলাকায় আলাদা ফলের দোকান শুরু করেন রাকিবুল। তার দোকানের নাম ‘মেসার্স আল্লাহর দান ফল ভান্ডার’। তাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে রাকিবুল সবার বড়। অপর দুই ভাইও ফল ব্যবসায়ী। বাবাও এখনো পর্যন্ত ফল ব্যবসা ধরে রেখেছেন। বর্তমানে এ তরুণ ও উদীয়মান ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম এর দুটি ফলের দোকান রয়েছে যার একটি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার হাটি কুমরুল ইউনিয়নের সিরাজগঞ্জ রোড গোলচত্ত্বর নামক স্থানে। এটির পজিশন ৫ লক্ষ টাকা ও মাসিক ভাড়া ৬ হাজার ৫ শত টাকা। অন্যটি একই থানা ও ইউনিয়নের জি, আর ডিগ্রী কলেজের পাশে জুবা ফুড পার্ডেন এর ভবনে। এটির অগ্রীম ৭ লক্ষ ও ভাড়া ১৪ হাজার টাকা। তার দুটি দোকানে বর্তমানে ৪ জন স্থায়ী কর্মচারী এবং দৈনিক মুজুরি ভিত্তিক অন্তত ১০ জন অস্থায়ী শ্রমিক কর্মচারী কাজ করছে।

তিনি এ সকল ফল চট্টগ্রাম ও দেশের অন্যন্য স্থলবন্দর এলাকা থেকে নিজ দোকানে নিয়ে আসেন। তার দুটি দোকানে গড়ে দৈনিক পাইকারী ও খুচরা মিলে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা বিক্রি হয়। নগদ ছাড়াও বাকীতে তাকে ফল বিক্রি করতে হয়। বড় পরিসরের পাইকারী দোকান ও দোকান সংলগ্ন ঘর মালামাল রাখার জন্য গোডাউন হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তার দোকানের ফল সমুহ প্রায় দিনে দিনেই বিক্রি হয়ে যায়। অবিক্রিত ফল খুব কমই থাকে। গড়ে মাসিক বাকীতে বিক্রির পরিমান বর্তমানে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা। তার ব্যবসায়িক মূলধন এখন ৫০ লক্ষ টাকার উপরে। তার ব্যবসা আরও বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। সঙ্গে মালামাল পরিবহনের জন্য ট্রাক ক্রয়ের ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি। রাকিবুল ইসলাম নব বিবাহিত। একজন ধার্মীক ও সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। উল্লাপাড়া থানার হাটি কুমরুল ইউনিয়নের হাটিপাড়া গ্রামে তার স্থায়ী নিবাস। সফল ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম হাটি কুমরুল ধোপা কান্দি মৌজায় ব্যবসার লাভের টাকায় ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে ২.৩৩ শতক জমি ক্রয় করেছেন।

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা ও সফলতা পাওয়ায় পিছনে এবং পুঁজি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনি কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ গ্রহণ করেছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন যে, আমি ইসলামী শরীয়াহর ভিত্তিতে পরিচালিত ডিএমসিবি’র সিরাজগঞ্জ শাখার একজন সদস্য ও বিনিয়োগ গ্রহীতা। আমি ২০১৫ সালে আমার ব্যবসা প্রসারের জন্য যখন অধিক পুঁজির প্রয়োজন বোধ করি, তখন আমি আমার একজন পরিচিত লোকের মাধ্যমে ডিএমসিবি’র সিনিয়র বিনিয়োগ কর্মকর্তা মোঃ ফরিদুল ইসলাম ভাই এর সাথে পরিচিত হই।। তিনি বলেন, যাদের দৈনিক বেচা-কেনা আছে এবং যারা সৎ ও কর্মঠ ব্যবসায়ী এমন ক্ষুদ্র ও মাঝারী ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় কম সময়ে ও সহজ শর্তে ডিএমসিবি বিনিয়োগ প্রদান করে থাকে। এ কথা শুনে আমি বিনিয়োগ নিতে আগ্রহী হই। বিনিয়োগ গ্রহণের জন্য কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে তা জানি এবং তার আশ্বাসে ও সহযোগিতায় ডিএমসিবি’র সিরাজগঞ্জ শহরের এস,এস রোডে অবস্থিত সিরাজগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নীতিমালার বিষয়ে অবগত করেন এবং আমাকে ব্যাংকের সকল নিয়ম মেনে প্রাথমিকভাবে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বিনিয়োগ প্রদান করেন। যা আমার ব্যবসা প্রসারে সহায়ক হয়। এরপর আমার বিনিয়োগ গ্রহণ বর্তমান পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে ১৬ লক্ষ টাকায় উন্নীত হয়েছে। আমি নিয়মিত বিনিয়োগের দৈনিক কিস্তি পরিশোধ করে আসছি।

ডিএমসিবি’র অত্র শাখা আমার বিনিয়োগ আরও বাড়ালে আমার ব্যবসা আরও সম্প্রসারিত হবে। আমি ছাড়াও অত্র এলাকায় আরও অনেক ব্যবসাীকে বিনিয়োগ প্রদান করেছে ডিএমসিবি। যেহেতু উত্তর বঙ্গের প্রবেশদ্বার হাটিকুমরুলের সিরাজগঞ্জ রোড গোলচত্ত্বর এবং সিরাজগঞ্জ জেলাসহ উত্তর বঙ্গের ১৬টি জেলা এবং দক্ষিন বঙ্গের ১০টি জেলার ট্রানজিট রুট পয়েন্ট। সেহেতু অত্র এলাকাটি যোগাযোগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ জনপদ হিসেবে অধিক পরিচিত লাভ করেছে।

নিজ এলাকা ও এলাকার বাইরে থেকে ব্যবসায়ীরা এসে এখান থেকে প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করে নিয়ে যায়। যোগাযোগের ক্ষেত্রে দ্রুত ও নিরাপদ অত্র এলাকাটি ক্রমান্বয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিনিত হয়েছে। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি অত্র গোলচত্ত্বর এলাকায় হওয়ায় আমার ব্যবসা সম্প্রসারণে আমার প্রবল ইচ্ছা রয়েছে। ভবিষ্যতে আমি আমার বর্তমান ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে আমার দোকানে দৈনিক আসা ডিএমসিবি’র বিনিয়োগ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছি। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে আমার কথা শুনছেন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে চলেছেন। আমি অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিনিয়োগ গ্রহণ করিনি। ডিএমসিবি’র সিরাজগঞ্জ শাখার সহায়তায় আমি এখন একজন সফল ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছি। এ জন্য ডিএমসিবি’র কাছে চির কৃতজ্ঞ এবং আমি অত্র প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।